ভারতের উত্তর প্রদেশে আযান, অখন্ড রামায়ন, কীর্তন, কাওয়ালি ইত্যাদিকে দায়ি করেছে শব্দ দূষ’ণের কারণ হিসেবে ।
শুধু তাই নয় এলাহাবাদ আদালত প্রথমিক ভাবে আজানের সময় মাইক ব্যবহার করার অনুমতিকে নাকজ করে দিয়েছে দুটি মসজিদে ।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের মতানুযায়ী আযানের সময় মাইক ব্যবহারের কারণে শুধু শব্দ দূ’ষণই হয়না, আরও অনেক মানুষ অসুবিধার সম্মুখীন হয়।
এলাহাবাদ হাইকোর্টেরই ২০ বছর আগে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ১টি রায়ের উ’দ্ধইয়েরসহ শব্দ দূ’ষণরোধ আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায় তুলে ধরেছিল ।
সেই পুরোনো রায়ে বলা হয়েছিল, আযানন, ‘অখন্ড রামায়ন, কীর্তন, কাওয়ালি বা অন্য যেকোনো অনুষ্ঠান যেমন, বিয়ে ইত্যাদির সময়ে মাইকের ব্যবহার করার কারণে অনেক মানুষের অসুবিধা হয়।
যাতে মাইক ব্যবহার না করা হয় সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছে ।’
সে সময়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ‘ প্রার্থনা করার সময়ে মাইক ব্যবহার করতে হবে বা বাজনা বাজাতে হবে এটা কোনো ধর্মই এটা শেখায় না ।
যদি সেরকম কোন ধর্মীয় বিধান থেকে থাকে, তাহলে অন্যদের তাতে বির’ক্তির উদ্রেক না হয় সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে ।’
সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে আছে, প্রত্যেকের নিজের ধর্মের বিধান পালন করার অধিকার আছে ঠিকই তবে সেই ধর্ম পালনের কারণে অন্যের অসুবিধা করার অধিকার কারও নেই।’
মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলোর অন্যতম ঘর, বাড়ি ও আবাসস্থল। ঘরবাড়ি মানবজীবনে শান্তি ও স্থিতির জন্য অপরিহার্য। ঘরবাড়ির গুরুত্ব পবিত্র কোরআনেও তুলে ধরা হয়েছে।
আল্লাহ পাক বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ঘরকে তোমাদের জন্য আবাসস্থল করেন এবং তিনি তোমাদের জন্য পশুর চামড়ার তাঁবুর ব্যবস্থা করেন—তোমরা ভ্রমণকালে ও অবস্থানকালে তাকে সহজ মনে কর ।’
(সুরা নাহল, আয়াত : ৮০)
নবী-রাসুলগণও মানবিক এই প্রয়োজনের ঊর্ধ্বে ছিলেন না । ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছিলেন তাঁরাও মানবিক প্রয়োজন মেটাতে । তবে তাঁদের ঘরবাড়ি প্রদর্শন ও অর্থহীন জৌলুসমুক্ত ছিল ।
নিজের জন্য আবাস তৈরি করেছিলেন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)ও! ; এই জীবন চিরদিনের জন্য নয় সে ঘর মানুষকে মনে করিয়ে দেয়! , বরং পরকালীন জীবনই মুমিনের জন্য প্রকৃত আবাস।
মদিনায় রাসুল (সা.)-এর বাড়ি
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর মসজিদে নববি নির্মাণ করেন। তাঁর দুই স্ত্রীর জন্য মসজিদের পাশেই নির্মাণ করেন দুটি কক্ষ , যার একটি আয়েশা (রা.) ব্যবহার করতেন এবং অন্যটি সাওদা বিনতে জামআ (রা.) ।
কক্ষ দুটি নির্মাণকালে মসজিদের পূর্ব দিকে ছিল । তখন বায়তুল মোকাদ্দাস কিবলা ছিল । কক্ষ দুটি কিবলা পরিবর্তন হওয়ার পর পশ্চিম দিকের দেয়ালের ওপাশে এবং নামাজের স্থান থেকে বাম পাশে চলে যায়। পরবর্তী সময় প্রয়োজন অনুযায়ী নির্মাণ করা হয় অন্য কক্ষগুলো । তবে পাঁচ গজের মতো দূরত্ব ছিল মসজিদের দেয়াল ও ঘরগুলোর মধ্যে ।
হারিস ইবনে নোমান (রা.) মসজিদে নববির পাশের ও সংলগ্ন ভূমির মালিক ছিলেন । তাঁর বাড়ি ছিল সেখানে । কিন্তু মহানবী (সা.)-এর প্রয়োজনে তিনি তা ছেড়ে দেন। রাসুল (সা.) তাঁকে উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করেন সে উপহার হিসেবে ছেড়ে দিলেও । রাসুল (সা.) ও তাঁর পবিত্র স্ত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হতো তাঁর পুরো বাড়িই । (আল ওয়াফা বি-আহওয়ালিল মোস্তফা, পৃষ্ঠা-২৬০)
মোট ৯টি ঘর নির্মাণ করা হয় সেখানে । খেজুরের ডাল ও কাঁচা ইট ব্যবহার করা হয় অবকাঠামোতে । পাথরের দেয়াল বা বেড়া ছিল চারটি ঘরের সামনে । শক্ত মাটির দেয়াল ছিল অন্যগুলোর সামনে , যেন কেউ ঢুকে যেতে না পারে সহজেই । প্রতিটি ঘরের দরজা ও জানালা ছিল ।
হাদিসের বর্ণনা হতে পাওয়া যায়, আয়েশা (রা.)-এর ঘরে কাষ্ঠ দরজা ছিল ১ পাল্লাবিশিষ্ট এবং তার সামনে ঝোলানো থাকত পর্দা । ছোট কক্ষও ছিল কোনো কোনো ঘরের সামনে । সে ক্ষেত্রে লাকড়ির তৈরি দরজা থাকত মূল কক্ষে এবং পর্দা ঝোলানো থাকত ছোট কক্ষের দরজায়। সাধারণ পশমের তৈরি কাপড়ের পর্দা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘরে ব্যবহৃত হতো।

0 মন্তব্যসমূহ